About Dawah And Tableeg

“Tabligh Jamaat” is one of the most successful movements in modern times.
Alhamdulillah,
all types of people from Ulama to illiterate people are getting benefits through their Efforts of Deen.

রবিবার, ১৫ জুলাই, ২০১২

হযরত আবু বকর রদিয়াল্লহু আ’নহু এর ইসলামের ঘোষণা ও নির্যাতন...

ইসলামের প্রথম যুগে যাঁহারা মুসলমান হইতেন তাঁহার নিজেদের ইসলাম গ্রহণকে যথাসাধ্য গোপন রাখিতেন। রসুলুল্লহ সল্লাল্লহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লামের পক্ষ হইতেও কাফেরদের নির্যাতনের কারণে গোপন রাখার নির্দেশ দেওয়া হইত। মুসলমানদের সংখ্যা যখন উনচল্লিশে পৌঁছিয়া যায় তখন হযরত আবু বকর সিদ্দীক রদিয়াল্লহু আ’নহু প্রকাশ্যে ইসলাম প্রচারের আবেদন জানাইলেন। রসুলুল্লহ সল্লাল্লহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম প্রথমে অস্বীকার করিলেন। হযরত আবু বকর রদিয়াল্লহু আ’নহু এর বারবার অনুরোধের কারণে অবশেষে অনুমতি দিলেন এবং মুসলমানদের লইয়া কা’বাঘরে তশরীফ লইয়া গেলেন। হযরত আবু বকর রদিয়াল্লহু আ’নহু তাবলীগি খুতবা পাঠ করিলেন। ইহাই ছিল ইসলামের সর্বপ্রথম খুতবা। ঐ দিনই রসুলুল্লহ সল্লাল্লহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লামের চাচা ‘সাইয়্যেদুশ শুহাদা’ (শহীদগণের সর্দার) হযরত হামযা রদিয়াল্লহু আ’নহু ইসলাম গ্রহণ করেন। ইহার তিনদিন পর হযরত উ’মার রদিয়াল্লহু আ’নহু ইসলাম গ্রহণ করেন। খুতবা শুরু হইতেই কাফের-মুশরিকরা চতুর্দিক হইতে আসিয়া মুসলমানদের উপর ঝাঁপাইয়া পড়িল। হযরত আবু বকর রদিয়াল্লহু আ’নহু যাঁর সম্মান ও মর্যাদা মক্কার সকলের নিকট স্বীকৃত ছিল। ইহা সত্ত্বেও তাঁহাকে এত প্রহার করিল যে, তাঁহার সম্পূর্ণ চেহারা মুবারক রক্তাক্ত হইয়া গেল। নাক কান রক্তে রঞ্চিত হইয়া গেল। তাঁহাকে চেনা যাইতেছিল না। জুতা ও লাথি দ্বারা আঘাত করিল, পদদলন করিল। যাহা করা উচিত ছিল না সবই করিল। হযরত আবু বকর সিদ্দীক রদিয়াল্লহু আ’নহু বেহুঁশ হইয়া গেলেন। তাঁহার গোত্র বনি তামীমের লোকেরা সংবাদ পাইয়া তুলিয়া লইয়া আসিল। কাহারো সন্দেহ ছিল না যে, হযরত আবু বকর রদিয়াল্লহু আ’নহু এই পাশবিক অত্যাচার হইতে জীবনে বাঁচিয়া উঠিতে পারিবেন না। বনু তামীম মাসজিদে আসিল এবং ঘোষণা করিল যে, হযরত আবু বকর রদিয়াল্লহু আ’নহু যদি এই দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করেন তবে আমরা তাঁহার বদলায় উতবা ইবনে রবীয়াকে হত্যা করিব। উতবা হযরত আবু বকর রদিয়াল্লহু আ’নহু এর অত্যাচারের ব্যাপারে সবচেয়ে বেশি বর্বরতা প্রদর্শন করিয়াছিল। সন্ধ্যা পর্যন্ত আবু বকর রদিয়াল্লহু আ’নহু বেহুঁশ অবস্থায় ছিলেন। ডাকাডাকি সত্ত্বেও সাড়া দিতে বা কথা বলিতে পারিতেছিলেন না। সন্ধ্যায় অনেক ডাকাডাকির পর তিনি কথা বলিলেন। তবে সর্বপ্রথম কথা এইছিল যে, রসুলুল্লহ সল্লাল্লহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম কেমন আছেন। লোকেরা এই ব্যাপারে তাঁহাকে বহু তিরষ্কার করিল যে, তাহার সহিত চলার কারণেই তো তোমার উপর এই বিপদ আসিয়াছে। এবং সারাদিন মৃত্যুমুখে থাকিবার পর কথা বলিলে তো তাহাও রসুলুল্লহ সল্লাল্লহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লামেরই জযবা এবং তাঁহারই আকাঙ্ক্ষা! অতঃপর লোকজন তাঁহার নিকট হইতে চলিয়া গেল। কেননা বিরক্তিও ছিল আবার ইহাও ছিল যে, শেষ পর্যন্ত বাঁচিয়া আছেন যেহেতু কথা বলিতে পারিয়াছেন। তাহারা আবু বকর রদিয়াল্লহু আ’নহু এর মাতা উম্মে খাইরকে (রদিয়াল্লহু আ’নহা) বলিয়া গেল যে, তাহার জন্য কিছু খানা পিনার ব্যবস্থা করুন। তিনি কিছু তৈরী করিয়া আনিলেন এবং খাওয়ার জন্য পীড়াপীড়ি করিলেন। কিন্তু হযরত আবু বকর রদিয়াল্লহু আ’নহু এর সেই একই কথা ছিল যে, রসুলুল্লহ সল্লাল্লহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম কেমন আছেন, তাঁহার কি অবস্থা? তাঁহার মাতা বলিলেন, তিনি কেমন আছেন আমি জানি না। হযরত আবু বকর রদিয়াল্লহু আ’নহু বলিলেন, উম্মে জামীল (রদিয়াল্লহু আ’নহা) (হযরত উ’মার রদিয়াল্লহু আ’নহু এর বোন)এর কাছে গিয়া জিজ্ঞাসা করিয়া দেখুন তাঁহার কি অবস্থা। সে বেচারী তাঁহার পুত্রের নির্যাতিত অবস্থায় ব্যাকুল মনের আবেদন পুরা করিবার জন্য উম্মে জামীলের (রদিয়াল্লহু আ’নহা) নিকট গিয়া মুহা’ম্মাদ সল্লাল্লহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম এর অবস্থা জিজ্ঞাসা করিলেন। তিনিও সাধারণ নিয়ম অনুযায়ী নিজের ইসলাম গ্রহণের ব্যাপারটি গোপন রাখিয়া ছিলেন। তিনি বলিলেন, আমি কি জানি কে মুহা’ম্মাদ (সল্লাল্লহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম) আর কে আবু বকর (রদিয়াল্লহু আ’নহু)? তবে তোমার ছেলের কথা শুনিয়া দুঃখ হইতেছে। যদি তুমি বল তবে আমি যাইয়া তাহার অবস্থা দেখিতে পারি। উম্মে খাইর (রদিয়াল্লহু আ’নহু) ইহাতে সম্মত হইলেন। তিনি তাঁহার সহিত গেলেন এবং হযরত আবু বকর রদিয়াল্লহু আ’নহু অবস্থা দেখিয়া সহ্য করিতে পারিলেন না। বেদমভাবে কাঁদিতে শুরু করিলেন যে, পাপিষ্ঠরা কি অবস্থা করিয়াছে, আল্লহ তায়া’লা তাহাদিগকে তাহাদের কৃতকর্মের শাস্তি দান করুন। হযরত আবু বকর রদিয়াল্লহু আ’নহু আবারও জিজ্ঞাসা করিলেন, মুহা’ম্মাদ সল্লাল্লহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম কেমন আছেন? উম্মে জামীল রদিয়াল্লহু আ’নহা হযরত আবু বকর রদিয়াল্লহু আ’নহু এর মাতা দিকে ইশারা করিয়া বলিলেন, তিনি শুনিতেছেন। আবু বকর রদিয়াল্লহু আ’নহু বলিলেন তাঁহার ব্যাপারে ভয় করিও না। তখন উম্মে জামীল রদিয়াল্লহু আ’নহা ভাল খবর শুনাইলেন। হযরত আবু বকর রদিয়াল্লহু আ’নহু জিজ্ঞাসা করিলেন, তিনি এখন কোথায় আছেন? উম্মে জামীল রদিয়াল্লহু আ’নহা বলিলেন, আরকাম রদিয়াল্লহু আ’নহু এর ঘরে আছেন। হযরত আবু বকর রদিয়াল্লহু আ’নহু বলিলেন, আমার জন্য আল্লহর কসম, ততক্ষন পর্যন্ত না কোন জিনিস খাইব, না পান করিব যতক্ষন পর্যন্ত রসুলুল্লহ সল্লাল্লহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাক্ষাত লাভ না করিব। তাঁহার মায়ের অস্থিরতা ছিল যে, সে কিছু আহার করুক আর তিনি কসম খাইলেন যে, যতক্ষন পর্যন্ত সাক্ষাত না করিব কিছুই খাইব না। কাজেই মাতা সুযোগের অপেক্ষায় রহিলেন যে, লোকদের চলাচল বন্ধ হইয়া যাক কারণ আবার কেহ দেখিয়া ফেলিলে কষ্ট দিতে পারে। যখন রাত্র গভীর হইয়া গেল। তখন আবু বকর রদিয়াল্লহু আ’নহু কে লইয়া রসুলুল্লহ সল্লাল্লহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লামের খেদমতে আরকাম রদিয়াল্লহু আ’নহু এর বাড়িতে পৌঁছিলেন। হযরত আবু বকর রদিয়াল্লহু আ’নহু রসুলুল্লহ সল্লাল্লহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম কে জড়াইয়া ধরিলেন। রসুলুল্লহ সল্লাল্লহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লামও তাঁহাকে জড়াইয়া ধরিয়া কাঁদিলেন। সমস্ত মুসলমানগণও কাঁদিতে লাগিলেন। কেননা আবু বকর রদিয়াল্লহু আ’নহু এর অবস্থা সহ্য করিবার মত ছিল না। অতঃপর আবু বকর রদিয়াল্লহু আ’নহু আবেদন করিলেন যে, ইনি আমার মাতা আপনি তাঁহার জন্য হিদায়াতের দুআ করুন এবং তাঁহাকে ইসলামের তাবলীগও করুন। রসুলুল্লহ সল্লাল্লহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম প্রথমে দুআ করিলেন অতঃপর তাঁহাকে ইসলাম গ্রহণের জন্য উৎসাহ দিলেন। তিনি তৎক্ষনাৎ মুসলমান হইয়া গেলেন। (খামীস)
ফায়দাঃ সুখ-শান্তি ও আনন্দের সময় মুহাব্বাতের দাবীদার অসংখ্য পাওয়া যায় কিন্তু প্রকৃত মুহাব্বাত উহাই যাহা বিপদ ও কষ্টের সময়েও অটুট থাকে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন