About Dawah And Tableeg

“Tabligh Jamaat” is one of the most successful movements in modern times.
Alhamdulillah,
all types of people from Ulama to illiterate people are getting benefits through their Efforts of Deen.

বুধবার, ২৭ জুন, ২০১২

গাবায় হযরত সালামাহ ইবনে আকওয়া রদিয়াল্লহু আ’নহু এর দৌড়.........

গাবা মাদীনা তইয়্যেবা হইতে চার পাঁচ মাইল দূরে অবস্থিত একটি আবাদী ছিল। সেখানে রসুলুল্লাহ সল্লাল্লহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লামের কিছু উট চরিত। কাফেরদের একদল লোকসহ আব্দুর রহমান ফাযারী উটসমূহ লুট করিয়া নিল, উটের রাখালকে হত্যা করিয়া ফেলিল। এই লুটতরাজকারীরা ঘোড়ায় সওয়ার ছিল এবং সশস্ত্র ছিল। ঘটনাক্রমে হযরত সালামাহ ইবনে আকওয়া রদিয়াল্লহু আ’নহু সকালবেলায় তীর ধনুক লইয়া পায়ে হাঁটিয়া গাবার দিকে যাইতেছিলেন। হঠাৎ লুটেরাদের প্রতি তাঁহার দৃষ্টি পড়িল। তিনি বালক ছিলেন এবং খুব দৌঁড়াইতে পারিতেন। কথিত আছে তাঁহার দৌড় অতুলনীয় ও প্রসিদ্ধ ছিল। তিনি দৌঁড়াইয়া ঘোড়াকে ঘরিয়া ফেলিতেন কিন্তু ঘোড়া তাঁহাকে ফহরিতে পারিত না। সে সঙ্গে তীর চালনায়ও প্রসিদ্ধ ছিলেন। হযরত সালামাহ ইবনে আকওয়া রদিয়াল্লহু আ’নহু একটি পাহাড়ে আরোহণ করিয়া মাদীনার দিকে মুখ করিয়া লুটতরাজের কথা ঘোষণা করিয়া দিলেন। তীর-ধনুক ত সাথে ছিলই, স্বয়ং ঐ সকল লুটেরাদের ধাওয়া করিলেন। এমনকি তাহাদের নিকট পর্যন্ত পৌঁছিয়া গেলেন এবং তীর ছুঁড়িতে আরম্ভ করিলেন এবং এমন দ্রুত একের পর এক তীর ছুঁড়িলেন যে তাহারা ভাবিল বিরাট দল রহিয়াছে। যেহেতু তিনি একা ছিলেন এবং পায়দলও ছিলেন এইজন্য যখন কেহ ঘোড়া ফিরাইয়া তাঁহার দিকে আসিত তখন তিনি কোন গাছের আড়ালে লুকাইয়া যাইতেন এবং আড়াল হইতে তাহার ঘোড়াকে তীর মারিতেন। ইহাতে ঘোড়া আহত হইত আর সেই ব্যক্তি এই মনে করিয়া ফিরিয়া যাইত যে, যদি ঘোড়া পড়িয়া যায় তাহলে আমি ধরা পড়িয়া যাইব। হযরত সালামাহ ইবনে আকওয়া রদিয়াল্লহু আ’নহু বলেন, মোটকথা, তাহারা পালাইতে থাকিল আর আমি ধাওয়া করিতে থাকিলাম। এমনকি রসুলুল্লাহ সল্লাল্লহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লামের যে উটগুলি তাহারা লুট করিয়াছিল উহা আমার পিছনে পড়িয়া গেল। ইহা ছাড়া তাহাদের ত্রিশটি বর্শা ও ত্রিশটি চাদরও ফেলিয়া গেল। এমন সময় উয়াইনা ইবনে হিসন একটি দলসহ সাহায্যের জন্য তাহাদের নিকট পৌঁছিয়া গেল। ইহাতে তাহাদের শক্তি আরও বাড়িয়া গেল। আর ইহাও জানিতে পারিল যে, আমি একা।
তাহারা কয়েকজন মিলিয়া আমার পিছনে ধাওয়া করিল। আমি একটি পাহাড়ের উপরে উঠিয়া গেলাম। তাহারাও উঠিল। তাহারা যখন আমার নিকট আসিয়া গেল তখন আমি উচ্চস্বরে বলিলাম, একটু থাম প্রথমে আমার একটি কথা শুন। তোমরা কি আমাকে চিন আমি কে? তাহারা বলিল বল তুম কে? আমি বলিলাম, ইবনে আকওয়া। ঐ পবিত্র সত্ত্বার কসম, যিনি মুহা’ম্মাদ সল্লাল্লহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লামকে সম্মান দান করিয়াছেন, তোমাদের মধ্য হইতে কেহ আমাকে ধরিতে চায় তবে ধরিতে পারিবে না। আর আমি যদি তোমাদের কাহাকেও ধরিতে চাই তবে আমার হাত হইতে সে কখনও ছুটিতে পারিবে না। যেহেতু তাঁহার সম্পর্কে সাধারণ ভাবে ইহা প্রসিদ্ধ ছিল যে, তিনি খুব বেশী দৌড়াউতে পারেন। এমনকি আরবী ঘোড়াও তাঁহার মুকাবিলা করিতে পারে না। কাজেই এইরূপ দাবী কোন আশ্চর্য কিছু ছিল না। সালামাহ রদিয়াল্লহু আ’নহু বলেন, আমি এইভাবে তাহাদের সহিত কথাবার্তা বলিতে থাকি আর আমার উদ্দেশ্য ছিল তাহাদের নিকট তো সাহায্য পৌঁছিয়া গিয়াছে; মুসলমানদের পক্ষ হইতে আমার সাহায্যও আসিয়া পৌঁছুক। কারণ, আমি মাদীনায় ঘোষণা করিয়া আসিয়া ছিলাম। মোটকথা, আমি তাহাদের সহিত ঐ ভাবে কথাবার্তা বলিতে ছিলাম আর গাছের ফাঁক দিয়া মাদীনা মুনাওয়ারার দিকে গভীর দৃষ্টিতে দেখিতেছিলাম। হঠাৎ ঘোড়সওয়ারদের একটি দল দৌড়াইয়া আসিতে দেখিলাম। তাহাদের মধ্যে সকলের আগে আখরাম আসাদী রদিয়াল্লহু আ’নহু ছিলেন। তিনি আসা মাত্রই আব্দুর রহমান ফাযারীর উপর করিলেন। আব্দুর রহমানও তাঁহার উপর হামলা করিল। তিনি আব্দুর রহমানের ঘোড়ার উপর করিয়া উহার পা কটিয়া ফেলিলেন। ইহাতে ঘোড়া পড়িয়া গেল। আব্দুর রহমান পড়িতে পড়িতে তাঁহার উপর হামলা করিয়া দিল। ইহাতে তিনি শহীদ হইয়া গেলেন। আব্দুর রহমান তৎক্ষনাৎ তাঁহার ঘোড়ার উপর সওয়ার হইয়া গেল। তাঁহার পিছনে আবু কাতাদাহ রদিয়াল্লহু আ’নহু ছিলেন। তিনি সঙ্গে সঙ্গে আক্রমন শুরু করিয়া দিলেন। আব্দুর রহমান আবু কাতাদাহ রদিয়াল্লহু আ’নহু এর ঘোড়ার পায়ের উপর আঘাত করিল ফলে গোড়া পড়িয়া গেল এবং আবু কাতাদাহ রদিয়াল্লহু আ’নহু পড়িতে পড়িতে আব্দুর রহমানের উপর আক্রমন করিলেন, ফলে সে নিহত হইল। অতঃপর আবু কাতাদাহ রদিয়াল্লহু আ’নহু সঙ্গে সঙ্গে ঐ ঘোড়ার উপর যাহা আখ্রাম আসাদী রদিয়াল্লহু আ’নহু এর কাছে ছিল এবং এখন যাহার উপর আব্দুর রহমান সওয়ার ছিল চড়িয়া বসিলেন। (আবু দাউদ)

ফায়দাঃ কোন কোন ইতিহাস গ্রন্থে লেখা আছে যে, হযরত সালামাহ রদিয়াল্লহু আ’নহু আখরাম আসাদী রদিয়াল্লহু আ’নহু কে আক্রমন করিতে বাধাও দিয়াছিলেন যে, একটু অপেক্ষা করুন আমাদের দলের আরও লোকদের আসিতে দিন। কিন্তু তিনি বলিলেন, আমাকে শহীদ হইতে দাও। বর্ণিত আছে যে, মুসলমানদের মধ্যে একমাত্র তিনিই শাহাদাত বরণ করেন এবং কারেফদের বহু লোক এই যুদ্ধে মারা যায়। ইহার পর মুসলমানদের বিরাট দল আসিয়া পৌঁছে এবং তাহারা (কাফেররা) পালাইয়া যায়। সালামাহ রদিয়াল্লহু আ’নহু রসুলুল্লহ সল্লাল্লহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে আবেদন করিলেন যে, আমাদের একশত লোক দিন তাহাদের ধাওয়া করিব। কিন্তু রসুলুল্লহ সল্লাল্লহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম ফরমাইলেন, তাহারা নিজেদের দলে পৌঁছিয়া গিয়াছে।
অধিকাংশ ইতিহাস গ্রন্থ হইতে জানা যায় যে, হযরত সালামাহ রদিয়াল্লহু আ’নহু এর বয়স তখন বার কি তের ছিল। বার-তের বছরের বালকের ঘোড় সওয়ারদের এক বিরাট দলকে এইভাবে পালাইতে বাধ্য করে যে, তাহারা দিশাহারা হইয়া পড়ে। যাহা কিছু লুঠ করিয়াছিল উহাও ছাড়িয়া যায়, এমনকি নিজেদেরও সামানপত্র ছাড়িয়া যায়। ইহা ঐ ইখলাসের বরকত ছিল যাহা আল্লহ তায়া’লা উক্ত জামাতকে দান করিয়া ছিলেন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন